কিম জং উনের কঠোর পদক্ষেপ উত্তর কোরিয়ায় ‘হট ডগ’ নিষিদ্ধ
- By Jamini Roy --
- 17 January, 2025
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন দেশটির জনগণের মধ্যে পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি দেশজুড়ে জনপ্রিয় খাবার ‘হট ডগ’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার মতে, এই খাবারটি পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতীক এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত প্রভাবকে সমর্থন করে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিম জং উন এই নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে কার্যকর করার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন, যারা এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে, তাদেরকে উত্তর কোরিয়ার কুখ্যাত শ্রম শিবিরে পাঠানো হবে।
কিম জং উন বিশ্বাস করেন, ‘হট ডগ’ খাবারের মাধ্যমে উত্তর কোরীয়রা দক্ষিণ কোরিয়ার পাশাপাশির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ায় সসেজ চালু হওয়ার পর এই খাবারটি সেখান থেকে উত্তর কোরিয়ায় প্রবাহিত হতে শুরু করে, যা তাকে একেবারে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে।
এছাড়া, কিমের মতে, ‘হট ডগ’ হলো পুঁজিবাদী ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্বকারী একটি খাবার। সুতরাং, এই ধরনের খাবারকে তার দেশে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। এ খাবারটি উত্তর কোরিয়ায় ‘বুদা জিগাই’ নামে পরিচিত ছিল, যা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে এসেছে।
‘হট ডগ’ খাবারটি ১৯৫০ সালের কোরিয়া যুদ্ধের সময়ে মার্কিন সেনাদের দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। যুদ্ধের সময় সেনারা মাংস দিয়ে বিশেষ একটি খাবার প্রস্তুত করেছিলেন, যা পরে ‘হট ডগ’ নামে পরিচিতি পায়। এরপর সেই খাবারের আদলে তৈরি করা ‘আর্মি বেস স্টু’ এক সময় কোরিয়ানদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
২০১৭ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ার ফুটপাতে ‘বুদা জিগাই’ নামে হট ডগ বিক্রি হতে থাকে। শুরুর দিকে এটি খুব একটা পরিচিত ছিল না, তবে কিছু বছরের মধ্যে এই খাবারটি উত্তর কোরিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের এই নিষেধাজ্ঞা মূলত পশ্চিমা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তার সরকারের আরও এক কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিম বিশ্বাস করেন, এই ধরনের খাবার ও সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ দেশের জন্য ক্ষতিকর এবং এর মাধ্যমে পুঁজিবাদী চিন্তাধারার বিস্তার হতে পারে, যা তার শাসনকেও দুর্বল করে তুলতে পারে।
তিনি মনে করেন, এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে উৎসাহিত করা সম্ভব। তবে, এই পদক্ষেপের ফলে দেশের মানুষ সম্ভবত এক ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সম্মুখীন হবে, যেখানে পশ্চিমা খাবারের প্রতি আগ্রহ কমবে এবং কিমের আদর্শের প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধি পাবে।